সফটওয়্যার টেস্টিং এর সাইকোলজি (The Psychology of Software Testing)

ডেভেলপার বনাম টেস্টার মানসিকতা

• ডেভেলপারদের মানসিকতা: সিস্টেমকে কাজ করানো (make it work) → তাদের মূল উদ্দেশ্য সফটওয়্যার ফিচার ঠিকমতো চলা নিশ্চিত করা।
• টেস্টারদের মানসিকতা: সিস্টেমে কোথায় কাজ করছে না (break it or find defects) তা খুঁজে বের করা।

তাই টেস্টারকে সবসময় সন্দেহপ্রবণ (skeptical) দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করতে হয়।

মানবীয় ভুল এবং টেস্টিং

• সফটওয়্যার মূলত মানুষের লেখা কোড → মানুষ ভুল করে → তাই সফটওয়্যারে বাগ থাকা স্বাভাবিক।
• টেস্টিং হলো সেই ভুলগুলো সনাক্ত করা, বিশ্লেষণ করা এবং রিপোর্ট করা।

টেস্টারকে সবসময় “ভুল হতে পারে” এই মনোভাব রাখতে হবে।

ইগো এবং সংঘাত (Ego & Conflict)

• বাগ রিপোর্ট করলে অনেক সময় ডেভেলপাররা ব্যক্তিগতভাবে নেয় (as criticism)।
• এজন্য টেস্টারদের ভাষা হতে হবে পেশাদার, ভদ্র এবং তথ্যভিত্তিক।
• উদ্দেশ্য হলো প্রোডাক্টের গুণগত মান বাড়ানো, কারও কাজ খারাপ প্রমাণ করা নয়।

ইতিবাচক ও নেতিবাচক চিন্তাভাবনা

• টেস্টিং এ শুধু “নেগেটিভ” চিন্তা করলেই হবে না।
• টেস্টারের কাজ হলো সফটওয়্যার কি সঠিকভাবে কাজ করছে এবং কোথায় ভুল করছে—দুই দিকই যাচাই করা।

ব্যবহারকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা (User Psychology)

• একজন টেস্টারকে সবসময় ভেবে দেখতে হবে—বাস্তবে একজন ইউজার কিভাবে সিস্টেম ব্যবহার করবে?
• এতে করে ইউজার এক্সপেরিয়েন্স সম্পর্কিত বাগ বের করার সম্ভাবনা বাড়ে।

কনফার্মেশন বায়াস (Confirmation Bias)

• অনেক সময় ডেভেলপার বা টেস্টার নিজেদের ধারণা প্রমাণ করার চেষ্টা করে।
• কিন্তু টেস্টিং এ প্রয়োজন খোলা মনের দৃষ্টিভঙ্গি, যাতে আসল সমস্যাগুলো ধরা পড়ে।

সফটওয়্যার টেস্টিং এর সাইকোলজি হলো এমন এক মানসিকতা, যেখানে টেস্টার সবসময় প্রশ্ন করে, সন্দেহ করে, প্রমাণ খোঁজে এবং ব্যবহারকারীর মতো ভেবে সফটওয়্যারের গুণগত মান নিশ্চিত করে।

সফটওয়্যার টেস্টিং এর সাইকোলজি বোঝানোর জন্য একটি ছোট গল্পের মাধ্যমে দেখি –

একদিন একটি সফটওয়্যার কোম্পানিতে নতুন ফিচার তৈরি হলো—অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম।

ডেভেলপার S অনেক পরিশ্রম করে কোড শেষ করলো।

A (ডেভেলপার) খুশি হয়ে বলল: “দেখো! আমার কোড একদম ঠিকমতো কাজ করছে। ১০০ টাকার পেমেন্ট দিলে ১০০ টাকাই কেটে যাচ্ছে। সব ঠিক আছে!”

তখন টেস্টার T এসে বলল: “হুম… আমি দেখি তো!”

• মায়া প্রথমে সঠিক ডেটা দিয়ে টেস্ট করল → কাজ হলো।
• এরপর সে ভুল কার্ড নাম্বার দিলো → পেমেন্টও সফল দেখাচ্ছে!
• আবার সে নেগেটিভ ভ্যালু (-100 টাকা) দিলো → সিস্টেম পেমেন্ট গ্রহণ করে নিলো!
• অবশেষে সে একই লেনদেন বারবার করলো → ব্যবহারকারীর টাকা দ্বিগুণ কেটে গেলো।

টেস্টার T হেসে বলল: “তুমি শুধু ভেবেছো কাজ করবে কিভাবে, আমি ভেবেছি কাজ নষ্ট হবে কিভাবে।এই দুই দৃষ্টিভঙ্গির ভারসাম্যেই সফটওয়্যার নিখুঁত হয়।”

• ডেভেলপাররা ভাবেন সফটওয়্যারকে কীভাবে চালু রাখা যায়।
• টেস্টাররা ভাবেন সফটওয়্যার কোথায় ভাঙতে পারে।
• এটাই সফটওয়্যার টেস্টিং এর সাইকোলজির মূল কথা—সন্দেহপ্রবণ চোখে দেখা, ব্যবহারকারীর জায়গায় নিজেকে কল্পনা করা, এবং ভুল খুঁজে বের করা।